এখন ডিজিটাল যুগ। তাই প্রযুক্তির সাথে সাথে অনলাইনে ঘরে বসে আয় করা বা Make money Online Earning অনেক সহজ ও নির্ভরযোগ্য উপায়। প্রায় প্রতিটি মানুষের কাছে মোবাইল ফোন রয়েছে। ইন্টারনেটও হাতের মুঠোয়। তাই এখন চাইলেই খুব সহজে ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন ভাবে আয় করা সম্ভব। এর জন্য কোনও রকম কায়িক পরিশ্রমের প্রয়োজন পড়ে না। কেবল একটু সময়, ধৈর্য এবং সতর্ক থাকলেই হয়।
Online Earning opportunities
অনলাইনের মাধ্যমে আয়ের (Online Earning) নানান সুযোগ আছে, একথা যেমন সত্য, তেমনই ইন্টারনেট ব্যবহার করে আয় করতে গেলে প্রতারিত হবার সম্ভাবনাও থেকে যায়, এটাও সত্যি।
তাই, যদি কোথাও বিজ্ঞাপনে দেখেন যে, ‘রাতারাতি কোটিপতি হয়ে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে’ কিম্বা ‘এক ক্লিকেই অনেক টাকা’ ইত্যাদি লেখা আছে, তবে তৎক্ষণাৎ নিজেকে ওই সব সাইট থেকে সরিয়ে নিয়ে আসুন।
অনলাইনে কাজ করে আয় করার অনেক রকম বিকল্প আছে। আমাদের এই প্রতিবেদনে তেমনই কিছু উপায় এবং খাঁটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, ওয়েবসাইট ও রিসোর্সের ব্যাপারে আলোচনা করা হয়েছে। এগুলো কাজে লাগিয়ে আপনি এবার থেকে খুব সহজেই অনলাইনে আয় করতে পারবেন। জেনে নিন Online Earning বা অনলাইনে আয় করার 5টি নিরাপদ ও সহজ পদ্ধতি।
Top 5 online Earning Sites
- ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing)
- ভার্চ্যুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট (Virtual Assistant)
- অনুবাদ (Translator Jobs)
- ব্লগিং (Online Earning Blogging)
- ওয়েবসাইট তৈরি (Online Earning Website Design)
ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing)
ঘরে বসে, বিনা খাটনিতে আয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে এই ফ্রিল্যান্সিং (Freelancing Jobs) বিষয়টি।
এখানে মূলত বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সারদের দক্ষতার ওপর নির্ভর করে ফ্রিল্যান্স কাজের সুযোগ দেয় বেশ কিছু ওয়েবসাইট। সেই সব ওয়েবসাইটগুলিতে নিজের প্রয়োজনীয় তথ্যাদি দিয়ে অ্যাকাউন্ট খুলে নিজের দক্ষতা অনুযায়ী কাজের জন্য আবেদন করতে হয় গ্রাহকদের। এরপর ওয়েবসাইটগুলি, গ্রাহকদের প্রয়োজন অনুযায়ী ফ্রিল্যান্সারের সাথে যোগাযোগ করিয়ে দেয়।
এই ওয়েবাসাইটগুলিতে মূলত নিজেদের কাজের দক্ষতার বিবরণ শেয়ার করতে হয়, এর ফলে ক্রেতারা সরাসরি যোগাযোগ করে নিতে পারেন। ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইটগুলির মধ্যে বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় ওয়েবসাইট হল ফাইভার ডটকম, আপওয়ার্ক ডটকম, ফ্রিল্যান্সার ডটকম এবং ওয়ার্কএনহায়ার ডটকম ইত্যাদি। এই ওয়েবসাইটগুলিতে ফ্রিল্যান্সিং কাজ করে ঘণ্টায় ৫ থেকে ১০০ ডলার পর্যন্ত আয় (Online Earning) করা সম্ভব।
তবে এক্ষেত্রে একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে যে, কাজ শেষ করার পর কাজদাতার অনুমোদন পেলেই তবেই পেমেন্ট করা হয় এখানে। অর্থাৎ, ডেলিভারি করা কাজ গ্রাহকের পছন্দ না হওয়া পর্যন্ত করে দিতে হয় ফ্রিল্যান্সারকে। নাহলে পেমেন্টের ক্ষেত্রে অসুবিধা হয়। এই ওয়েবসাইটগুলিতে আবার ফ্রিল্যান্সারের করা কাজকে রেটিং দিতে পারেন গ্রাহকরা। এখানে বিভিন্ন ধরণের অনলাইন পেমেন্ট অ্যাপ ব্যবহার করে টাকা উইথড্র করা যায়।
ভার্চ্যুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট (Virtual Assistant)
বর্তমানে ভার্চ্যুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট (Virtual Assistant) নামক পদটির নাম অনেকেই শুনে থাকবেন। এই কাজের মাধ্যমে ঘন্টা প্রতি বেশ মোটা টাকা আয় করা সম্ভব। এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করে বাড়ি থেকে কর্পরেট অফিস, সর্বত্রই অনলাইনে নানান কাজ করার জন্য নিয়োগ করা হচ্ছে ভার্চ্যুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্টদের। এই পদে মূলত কলিং, ই-মেইল পাঠানো, কোনো বিষয় নিয়ে ইন্টারনাল রিসার্চ, বিভিন্ন প্রোজেক্টের ডেটা এন্ট্রি, লেখা এডিটিং, ব্লগ রাইটিং অথবা টেক সাপোর্ট ইত্যাদি ধরনের কাজ করতে হয়।
অনেক ওয়েবসাইট আছে, যেখানে ভার্চ্যুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট পদের জন্য আবেদন করা যায়। তেমন কয়েকটি ওয়েবসাইট হল 24/7 ভার্চ্যুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট, অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যাচ, ফ্রিল্যান্সার ডটকম (Freelancer.com), পিপল পার আওয়ার এবং আপওয়ার্ক (Upwork) ইত্যাদি। এখানে নিজেকে রেজিস্টার করে নিতে হয় প্রথমে। তারপর কাজের বিজ্ঞাপন দেখে আবেদন করতে হয়। এভাবে দিনের কয়েক ঘন্টা কাজে লাগিয়ে খুব সহজেই আয় করা যায়।
অনুবাদ (Translator Jobs)
অনেকেই আছেন, যারা ইংরেজি সহ একাধিক বিদেশি ভাষা জানেন। বহু ভাষা জানার এই দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে খুব সহজেই অনলাইনে আয় করা (Online Earning) সম্ভব। অনলাইনে এমন অনেক ওয়েবসাইট আছে, যেগুলিতে বিভিন্ন ভাষায় ডকুমেন্ট অনুবাদ করে আয় করা যায়।
বর্তমানে স্প্যানিশ, ফ্রেঞ্চ, আরবি ইত্যাদি ভাষা থেকে ইংরেজিতে অনুবাদ এবং ইংরেজি থেকে এই ভাষাগুলিতে অনুবাদ করার জন্য অনুবাদক নিয়োগ করা হয়ে থাকে। তাই যাদের একাধিক ভাষাজ্ঞান আছে, তারা অনুবাদক হিসেবে কাজ করে আয় করতে পারেন। এর ফলে টাকা যেমন উপার্জন হবে, তেমনই ভাষার উপর দক্ষতাও বাড়বে। সাথে, নিজের সিভি বা বায়োডেটা সমৃদ্ধ করার ক্ষেত্রেও এটি কাজে আসবে। বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলোতে এই ধরনের কাজের বিজ্ঞপ্তি দেখতে পাবেন।
ব্লগিং (Online Earning Blogging)
লেখালিখি করার (Content Writting) শখ অনেকেরই থাকে। কিন্তু জানেন কি, এই নেশাকেই আপনি পেশায় পরিণত করতে পারেন? হ্যাঁ, ঠিকই শুনছেন। ব্লগ লিখেও আয় করা সম্ভব।
এক্ষেত্রে মূলত দুই ভাবে ব্লগ থেকে আয় করা যেতে পারে। প্রথম উপায়টি হচ্ছে নিজের ব্লগ সাইট তৈরি করা। এক্ষেত্রে আপনি খুব সহজেই ওয়ার্ডপ্রেস বা টাম্বলার এর মত প্ল্যাটফর্মে একেবারে বিনা মূল্যে ব্লগ লেখা শুরু করতে পারেন।
দ্বিতীয়ত, নিজে ডোমেইন হোস্টিং কিনেও ব্লগ লেখা চালু করা যেতে পারে। তবে এক্ষেত্রে কিছু পুঁজি বিনিয়োগ করতে হবে, যদিও তার পরিমাণ খুবই স্বল্প। টাকা দিয়ে যদি ডোমেইন, হোস্টিং কিনে আপনি নিজের ব্লগ শুরু করতে চান, তাহলে খুব সহজেই এবং কম সময়ে ভালো আয় করতে পারবেন। ব্লগ তৈরি করে সেখানে নিয়মিত কনটেন্ট আপডেটের মাধ্যমে সেটিকে সক্রিয় রাখুন। এবং বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আয় করুন মোটা টাকা। এই ব্যাপারে ইউটিউবে অনেক টিউটোরিয়াল পাবেন, দরকারে সেগুলি দেখে নিতে পারেন।
ওয়েবসাইট তৈরি (Online Earning Website Design)
এটি আরেকটি জনপ্রিয় উপায় অনলাইনে টাকা উপার্জন করার। অনেকেই এখন নিজস্ব ওয়েবসাইট তৈরি করে আয় করে থাকেন। ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য যেসব উপাদানের প্রয়োজন পড়ে, যেমন, ডোমেইন নির্বাচন, টেমপ্লেট ও ওয়েবসাইট তৈরির নকশা ইত্যাদি অনলাইনেই কিনতে পাওয়া যায়।
যে কোনও বিষয়ের বা টপিকের উপর ওয়েবসাইট বানাতে পারেন। যেমন ট্রাভেল, পড়াশোনা, খবর, খেলাধুলা ইত্যাদি।
ওয়েবসাইটটি সম্পূর্ণ তৈরি হয়ে গেলে গুগল অ্যাডসেন্সের জন্য আবেদন করে ফেলুন। এর ফলে আপনার ওয়েবসাইটে গুগলের বিজ্ঞাপন দেখানো শুরু হবে এবং গ্রাহকরা ওয়েবসাইটের লেখা পড়তে এসে তাতে ক্লিক করবেন, তখন আয় করতে শুরু করবেন আপনি। এভাবে দিন দিন যত ওয়েবসাইটে ট্রাফিক বা দর্শকের সংখ্যা বাড়বে, পাল্লা দিয়ে বাড়বে আয়ের পরিমাণও।
উপরোক্ত বিষয়গুলির মধ্যে আপনার যে ক্ষেত্রে বেশি দক্ষতা রয়েছে, সেই বিষয় নিয়ে কাজ শুরু করুন। ঘরে বসে অনলাইনে আয় করতে পারবেন খুবই সহজে। আর এই ব্যাপারে কোনও প্রশ্ন বা মতামত থাকলে নিচে কমেন্ট করুন।আর এই ধরনের আরও আর্টিকেল পেতে কাজ বাংলা ওয়েবসাইট ফলো করুন। প্রতিবেদনটি সকলকে শেয়ার করুন।
Please details