কিভাবে শুরু করতে হবে এই ব্যবসা?
ব্যবসা করার (Business Ideas) কথা ভাবছেন? তবে চিন্তিত! কম পুঁজিতে কিভাবে শুরু করবেন? দুশ্চিন্তা ভুলে যান। এমন অনেক ব্যাবসা রয়েছে, যেগুলির মাধ্যমে সহজেই মুনাফা লাভ করা সম্ভব। তবে বিনিয়োগ করতে হবে কম পয়সা। আজকে এই প্রতিবেদনে সেইরকম ৫ টি দুর্দান্ত ব্যবসায়িক আইডিয়া দেওয়া হবে। অতিমারীর আবহে দেশ আর্থিক সংকটের একেবারে গোড়ায় এসে পৌঁছেছিলো। যেই কারণে সাধারণ মানুষকেও নানা কারণে আর্থিক অস্বচ্ছলতার মুখে পড়তে হয়েছিল।
এমনকি পরিবারের মেধাবী পড়ুয়াটিকেও পড়াশোনা চালাতে এবং পরিবারের আর্থিক সমস্যা কাটাতে পড়াশোনার পাশাপাশি করতে হয়েছে কাজও। অবশ্য আজও অনেক ক্ষেত্রেই সেই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব হয়নি। এছাড়া অনেকেই বদলতে ফেলতে বাধ্য হয়েছেন পেশাও। আর বর্তমানে চাকরির বাজার ও খুবই খারাপ। ১০ টি শূন্যপদে নিয়োগের জন্য লাখ লাখ আবেদন জমা পড়ে। আর এই পরিস্থিতিতে ব্যবসার দিকে ঝুকছেন অনেকেই। কিন্তু ব্যবসার জন্য প্রজনিয় মূলধন না থাকায়, বর্তমানে অনেকেই ভাবছেন কম পুঁজিতে নতুন ব্যবসা শুরু করবেন। কিন্তু কি ব্যবসা করবেন? কিসের ব্যবসা করবেন ভেবে পাচ্ছেন না। তাদের জন্য এই প্রতিবেদন। তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক কম পুঁজিতে ৫ টি সফল ব্যবসার আইডিয়া।
কম পূঁজি | বেশি পূঁজি |
রিস্ক কম, আয় কম | রিস্ক বেশি, আয় ও লস বেশি |
ব্যবসায়িক জ্ঞান নেই | অভিজ্ঞ হতে হবে |
চাপ কম | চাপ বেশি |
৫টি কম পুঁজিতে ব্যবসার আইডিয়া
- Flower Business
- Vegetable Business
- Fast-food Business
- Pickles Business
- Laundry Business
ফুলের ব্যবসা (Flower Business)
ফুলের ব্যাবসা আজ থেকে নয়। এই ব্যবসার মাধ্যমে মুনাফা লাভ করার প্রচেষ্টা বহু সময় আগের থেকেই ছিল। যে কোনো অনুষ্ঠানে ফুলের প্রয়োজন হয়ই। যেমন অনুষ্ঠান বাড়ি বা বিশেষ পুজোতে আবার বিয়ে বাড়ি, অন্নপ্রাশন, যেকোনো শুভ অনুষ্ঠানে ফুলের প্রয়োজন হয়। তাছাড়া নিত্যদিনের পুজোতেও লাগে ফুল। তাই ফুলের চাহিদা এক একজনের কাছে এক এক রকম। পরিমান অনুসারে ক্রেতারা কিনে থাকেন।
ফুলের দাম প্রচুর হলেও প্রয়োজনে এটি কিনতেই হয়। তবে খুচরো ফুল বা ফুলের মালা নয়, বুকের চাহিদাও কম নয়। ফুলের দোকানে ফুল, মালার সঙ্গে সুন্দরভাবে পুষ্পস্তবক বা বুকে সাজিয়ে রাখলে ক্রেতার কাছে তা আকর্ষণীয় বলে মনে হয়। যত দামী হোক না কেন, তখন তারা সেটি কেনে। তাই এই ব্যবসার মাধ্যমে সহজেই প্রতিদিন কমপক্ষে ১ থেকে ২ হাজার টাকা উপার্জন করা যায়। ব্যাবসার পরিসর বাড়লে বিক্রি ও লাভ দুই-ই বাড়বে।
শাক সবজির ব্যবসা (Vegetable Business)
নিত্যদিন একই পদের রান্না কেই বা পছন্দ করেন। আর যদি বাড়িতে ছোট বাচ্চা বা বয়স্ক মানুষ থাকে, তার পছন্দমতো একটা দুটো পদ তো করতেই হয়। তাই আলাদা আলাদা সবজিও কিনতে লাগে। ফলে সবজির ব্যাবসা যথেষ্ট মুনাফাদায়ক। তবে খেয়াল রাখতে হবে, বাজারের চাহিদা অনুযায়ী পরিমাণমতো শাকসবজি তুলতে হবে, যাতে নষ্ট না হয়। তাছাড়া ব্যবসা শুরু করার জন্য সঠিক জায়গা আগে থেকেই নির্বাচন করতে হবে। সঠিকভাবে বুঝে এই Business করলে প্রতি মাসে কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা আয় করা যাবে।
ফাস্টফুডের ব্যবসা (Fast-food Business)
পিৎজা, মোমো, বার্গার কিংবা চাইনিজ ইত্যাদি খাবার খেতে পছন্দ করেন, এমন মানুষের সংখ্যা দেশে নেহাতই কম নয়। বাইরে বের হলে খেতেই হবে। আর তা না হলে বাড়িতে বসেই অর্ডার দেওয়া হয়। মুহূর্তের মধ্যেই ডেলিভারি দিয়ে যায় খাবারও। মোটমাট কথা, এই Business কম পুঁজিতে শুরু করলে সহজেই ভালো লাভ করা যায়। তবে একটা কথা, এই খাবারগুলি কিভাবে করতে হয়, তা আগে শিখতে হবে। রান্না করে নিজেকে চেখে দেখতে হবে। যাতে তা ক্রেতার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়।
আর সবথেকে বড়ো ব্যাপার হল, এই ব্যাবসা শুরু করার আগে জায়গা নির্বাচন করতে হবে। এমন একটি জায়গা বেছে নিতে হবে, যেটি একটু জনবহুল এরিয়া। অন্যান্য খাবারের সঙ্গে এগ রোল, মাটন রোল, চিকেন রোল ইত্যাদি আইটেমও রাখা যাবে। ব্যবসা শুরু করার আগেই প্রত্যেকটি খাবারের দাম নির্ধারণ করতে হবে। তৈরী করতে হবে মেনু কার্ড।
পরিকল্পনার সঙ্গে এই ব্যাবসা করলে প্রতি মাসে কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা উপার্জন করা সম্ভব।
আচারের ব্যবসা (Pickles Business)
গ্রীষ্ম, বর্ষা, শীত বা বছরের অন্যান্য যেকোনো সময়ই আচারের চাহিদা বর্তমান থাকে। আগেকার দিনে আচার বানানো মানেই আচারের উপকরণ একত্রিত করে রোদে শুকিয়ে নেওয়া। যদিও এখন অনেক বাড়িতেই সেই চল উঠে গেছে, একমাত্র সময়ের অভাবে। তাতে কী হয়েছে, বর্তমানে অনেক কোম্পানি রয়েছে যারা নানা রকমের আচার তৈরি করে বিক্রি করে থাকে। ক্রেতাদের কাছে এগুলির চাহিদাও কম নয়। তাই কম পুঁজিতে এই ব্যাবসা করাই যায়। আর খাবারের জিনিশের মান ভালো হলে, একবার প্রচার হলেই ভালোই চলবে।
শুধুমাত্র বুঝতে হবে ক্রেতাদের চাহিদার দিকটি। সেই বুঝে কোনটি কম পরিমানে, কোনটি বেশি পরিমানে বানাতে হবে, তা ভাবা যাবে। প্রথম প্রথম এই ব্যবসার মাধ্যমে কম মুনাফা রোজগার হলেও, ধীরে ধীরে ক্রেতাদের কাছে এর জনপ্রিয়তা বাড়লে ব্যবসায় লাভবান হওয়া যাবে।
সেক্ষেত্রে বাড়িতে আচার তৈরি করে অনলাইনে বা স্থানীয় বাজারের সমস্ত দোকানগুলিতে বিক্রি করে প্রতি মাসে কমপক্ষে ৭ হাজার টাকা থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব।
লন্ড্রির ব্যবসা (Laundry Business)
যেকোনো জায়গায় যেতে হলে পোশাক পরিচ্ছদ পরিষ্কার থাকতে হবে। কিন্তু জামাকাপড় ময়লা তো হবেই। আবার ব্যস্ত জীবনে ময়লা জামাকাপড় কাঁচার সময় নেই অনেকেরই। তাছাড়া ইস্ত্রি করতে হবে। অগত্যা ছোটেন লন্ড্রির দোকানে। কিংবা দোকানের মালিক এসে জামাকাপড় নিয়ে যান। আবার তা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে ইস্ত্রি করে গুছিয়ে ফেরত দিয়ে যান। কিন্তু জানেন কী এই Business দিয়েই প্রতি মাসে লাভ হবে হাজার হাজার টাকা।
অনেকের বাড়িতে ওয়াশিং মেশিন নেই। আবার কারো বাড়িতে এই মেশিন থাকলেও ঝামেলা থেকে মুক্তি নিতে লন্ড্রির দোকানে ছোটেন। শুধুমাত্র তাই নয়। বহু বড় বড় প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার রয়েছে, সেগুলি তাদের বহু সংখ্যক জামা কাপড় বা অন্যান্য সামগ্রীও এই লন্ড্রিতে দিতে থাকেন, কেচে পরিস্কার করার জন্য। এই ব্যাবসার মাধ্যমেই প্রতি মাসে কমপক্ষে ১৫ হাজার টাকা থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব।
আরও পড়ুন, জমি কেনার আগে এই বিষয়গুলো যাচাই করুন, নাহলে পরে ঠকতে পারেন।
আইডিয়া এবং প্রতিবেদনটি কেমন লাগলো নিচে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। এবং আরও Business Ideas সংক্রান্ত খবরের নতুন আপডেট সবার আগে পেতে হলে এই ওয়েবপোর্টালটি ফলো করতে ভুলবেন না। এই সংক্রান্ত কোনও পরামর্শ থাকলেও আমাদের লিখে জানাতে পারেন।